![]() |
Bangla love story |
একটি গ্রাম্য গাঁয়ে, সবুজে মোড়ানো মাঠের পাশে নদীর ধার ঘেঁষে ছিল নীলু আর মিতুর ছোট্ট জীবন। ছোটবেলা থেকেই তাদের বন্ধুত্ব, তারপর তা একসময় পরিণত হয় গভীর প্রেমে। দুই জনেই পরস্পরকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারত না। নদীর ধারে প্রতিদিন সন্ধ্যায় তারা হাঁটত, একে অপরের হাত ধরে আকাশের তারা দেখত, ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনত।
তবে ভালোবাসা এত সহজে সবার জীবনে স্থায়ী হয় না। নীলুর পরিবারের অবস্থা ছিল অত্যন্ত খারাপ, আর মিতুর পরিবার সমাজের উঁচু শ্রেণীর। মিতুর বাবা, যিনি গ্রামের একজন প্রভাবশালী মানুষ, কোনোভাবেই মিতুকে নীলুর সাথে মেনে নেননি। তিনি চাইতেন মিতু শহরের কোনো ধনী ছেলের সাথে বিয়ে করুক।
একদিন, মিতুর বাবা মিতুকে শহরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, সেখানে তার বিয়ের জন্য সবকিছু ঠিকঠাক করা হলো। মিতু বাধ্য হয়ে শহরে চলে গেল। নীলু প্রতিদিন নদীর ধারে বসে থাকত, অপেক্ষা করত মিতুর ফিরে আসার। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মিতু আর ফিরে এল না।
দিনের পর দিন কেটে যায়। মিতু অন্য কারো সাথে বিয়ে করে নিল, আর নীলু সেই স্মৃতিগুলোকে আঁকড়ে ধরে রেখেছিল। সে নদীর ধারে বসে থাকত, যেখানে তারা একসাথে সময় কাটিয়েছে, কিন্তু তার মিতু আর ফিরে এল না।
এক বর্ষার দিনে, নদীর ধারে নীলু বসে ছিল। আকাশে মেঘ জমেছিল, আর বৃষ্টি পড়ছিল টিপটিপ করে। হঠাৎ নদীর ঢেউ গর্জে উঠল, আর নীলু একটুখানি হেসে বলল, "মিতু, তুই না আসিস, কিন্তু এই নদীটা তো তোর মতোই রয়ে গেল।" সেই রাতে নীলু আর ফিরে আসেনি। সকালে গ্রামবাসীরা নদীর ধারে নীলুর নিথর দেহ খুঁজে পেল। নদী যেন তার ভালোবাসাকে চিরতরে গ্রাস করে নিয়েছে।
এইভাবে নীলু আর মিতুর গল্প শেষ হলো। নদীর ঢেউয়ের সাথে মিশে গেলো তাদের স্মৃতি, আর গ্রামের লোকেরা এখনো সেই নদীর ধারে গেলে বলে, "এখানে একসময় দুইটি ভালোবাসার হৃদয় একসাথে বেঁধে ছিল।"
0 মন্তব্যসমূহ